বেল (ফল)
বেল Aegle marmelos | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | এনজিওস্পার্ম |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Rosids |
বর্গ: | Sapindales |
পরিবার: | Rutaceae |
উপপরিবার: | Aurantioideae |
গোত্র: | Clauseneae |
গণ: | Aegle Corrêa |
প্রজাতি: | A. marmelos |
দ্বিপদী নাম | |
Aegle marmelos (L.) Corrêa[২] | |
প্রতিশব্দ[২] | |
|
বেল একটি পুষ্টিকর এবং উপকারী ফল। কাঁচা পাকা দুই অবস্থায়ই সমান উপকারী। কাঁচা-বেল ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগে ধন্বন্তরী। পাকা বেলের শরবত সুস্বাদু। বেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়ামের মত মূল্যবান পুষ্টি উপাদান। বেলকে বলা হয় শ্রীফল কারণ হিন্দুদের পূজা-অর্চনায় বেলের পাতা ও ফল ব্যবহার করা হয়। হিন্দুরা বেল কাঠ পবিত্র জ্ঞান করে বিধায় কখনো বেল কাঠ পুড়িয়ে রান্না করে না।
বর্ণনা
[সম্পাদনা]এর বৈজ্ঞানিক নাম: Aegle marmelos Correa (syn. Feronia pellucida Roth, Crataeva marmelos L)। বেল রুটাসি (Rutaceae) অর্থাৎ লেবু পরিবারের সদস্য। এর সংস্কৃত নাম বিল্ব। বেলের জন্ম ভারতবর্ষে। বেল গাছ বড় ধরনের বৃক্ষ যার উচ্চতা প্রায় ১০-১৬ মিটার। শীতকালে সব পাতা ঝরে যায়, আবার বসন্তে নতুন পাতা আসে। পাতা ত্রিপত্র যুক্ত, সবুজ, ডিম্বাকার ; পত্র ফলকের অগ্রভাগ সূঁচাল। ফুল হালকা সবুজ থেকে সাদা রঙের। বোঁটা ছোট, ৪-৫টি পাঁপড়ি থাকে, পুংকেশর অসংখ্য, গর্ভাশয় বিস্তৃত ও কেন্দ্রস্থল খোলা। ফুলে মিষ্টি গন্ধ আছে। ফল বড়, গোলাকার, শক্ত খোসা বিশিষ্ট। ফলের ভিতরে শাঁস ৮-১৫টি কোয়া বা খণ্ডে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি ভাগে বা খণ্ডে চটচটে আঠার সাথে অনেক বীজ লেগে থাকে। কাঁচা ফলের রঙ সবুজ, পাকলে হলদে হয়ে যায়। ভিতরের শাঁসের রঙ হয়ে যায় কমলা বা হলুদ। পাকা বেল থেকে সুগন্ধ বের হয়। পাকা বেল গাছ থেকে ঝরে পড়ে। গাছ যখন ছোট থাকে তখন তাতে অনেক শক্ত ও তীক্ষ্ণ কাঁটা থাকে। গাছ বড় হলে কাঁটা কমে যায়।
বেলপাতা
[সম্পাদনা]অনেকে মনে করেন প্রতিদিন একটি করে বেল পাতা ঘি দিয়ে ভেজে চিনি সহ খেলে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে।[৩] বেল পাতা ত্রিফলক যুগ্মপত্র। অর্থাৎ একটা বোটায় তিনটি করে পাতা থাকে। হিন্দুদের শিবপূজায় ত্রিনয়নের প্রতীক হিসাবে বিল্বপত্র ব্যবহার হয়। বেল পাতায় aegeline নামক এক প্রকার উপাদান থাকে যা ওজন কমানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। ২০১৪ সালে হওয়ায় দ্বীপে ৯৭ জন মানুষ aegeline দিয়ে তৈরি OxyElitePro ঔষুধ ব্যবহার করে হেপাটাইটিস রোগের শিকার হন। তাদের মধ্যে ৭২ জন aegeline সমৃদ্ধ OxyElite Pro ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেন। এটা ব্যবহারের ফলে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে হার্ট এট্যাক বা হৃদ রোগ ও মানসিক ভারসাম্যহীনতার মতো সমস্যা হতে পারে । এটি ব্যবহারের ফলে যকৃত বা লিভারের প্রভূত ক্ষতি হয়।
বেল
[সম্পাদনা]বেলের দ্রব্যগুণ
[সম্পাদনা]ফলের খাদ্যগুণ
[সম্পাদনা]১০০ গ্রাম বেলের শাঁসে থাকে: জল 54.96-61.5 গ্রাম, আমিষ 1.8-2.62 গ্রাম ; স্নেহপদার্থ 0.2-0.39 গ্রাম ; শর্করা 28.11-31.8 গ্রাম ; ক্যারোটিন 55 মিলিগ্রাম ; থায়ামিন 0.13 মিলিগ্রাম ; রিবোফ্ল্যাবিন ১.১৯ মিলিগ্রাম ;নিয়াসিন ১.১ মিলিগ্রাম ; এসকর্বিক এসিড ৮ - ৬০ মিলিগ্রাম ; এবং টারটারিক এসিড ২.১১ মিলিগ্রাম।
ফলের ভেষজগুণ
[সম্পাদনা]বেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও আমাশয়ে উপকার করে। আধাপাকা সিদ্ধ ফল আমাশয়ে অধিক কার্যকরী। বেলের শরবত হজমশক্তি বাড়ায় এবং তা বলবর্ধক। বেলের পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি ও জ্বালা উপশম হয়। পাতার রস, মধু ও গোল মরিচ এর গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়। পেট খারাপ, আমাশয়, শিশুর স্মরণ শক্তি বাড়ানোর জন্য বেল উপকারী। বেলে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। এই ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বেল নিয়মিত খেলে কোলন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়।
পাতা ও খোসায় (ফলের) সুগন্ধী তেল
[সম্পাদনা]উদ্বায়ী তেল
- d-limonene,
- alpha-d-phellandrene,
- cineol,
- citronellal,
- citral;
- p-cyrnene,
- cumin aldehyde
পাতা ও ছালের (কাণ্ডের) বিষ
[সম্পাদনা]পাতায় নানা উপক্ষার (Alkaloid) আছে:
- O-(3,3-dimethylallyl)-halfordinol,
- N-2-ethoxy-2-(4-methoxyphenyl) ethylcinnamide,
- N-2-methoxy-2-[4-(3',3'-dimethyalloxy) phenyll]ethylcinnamide,
- N-2-methoxy-2-(4-methoxyphenyl)-ethylcinnamamide ইত্যদি
তাই পাতা খেলে গর্ভপাত বা বন্ধ্যাত্ব হতে পারে বলে মনে করা হয়। গাছের ছাল Celebes দেশে মাছ মারা বিষ হিসাবে ব্যবহার হয়।
বেলের আঠা
[সম্পাদনা]চিত্রশালা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Plummer, J. (2020). Aegle marmelos. The IUCN Red List of Threatened Species 2020: e.T156233789A156238207. ডিওআই:10.2305/IUCN.UK.2020-3.RLTS.T156233789A156238207.en. Downloaded on 07 March 2021.
- ↑ ক খ "Taxon: Aegle marmelos (L.) Corrêa"। GRIN Global, National Plant Germplasm System, US Department of Agriculture। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৮।
- ↑ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞানঃ ২০০৮ সংস্করন