(Translated by https://www.hiragana.jp/)
উকুন - উইকিপিডিয়া বিষয়বস্তুতে চলুন

উকুন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

থির‍্যাপটেরা
Light micrograph of Fahrenholzia pinnata
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
উপশ্রেণী: Pterygota
অধঃশ্রেণী: Neoptera
বর্গ: Phthiraptera
Haeckel, 1896
Suborders

Anoplura
Rhyncophthirina
Ischnocera
Amblycera

উকুন (ইংরেজি: Lice) বলা হয় তিন হাজারেরও বেশি প্রজাতির পাখাহীন থির‍্যাপটেরা (Phthiraptera) বর্গভুক্ত পোকাকে। এদের মধ্যে মাত্র তিনটি প্রজাতি মানুষের ক্ষতি করে। এরা সকল পাখি এবং সকল স্তন্যপায়ী বর্গের গায়ে 'আবশ্যিক-বহিঃপরজীবি' হিসেবে বাস করে। তবে ব্যতিক্রম হচ্ছে মনোট্রিম (প্লাটিপাস এবং একিডনাস), বাদুড়, তিমি, ডলফিন, পরপয়েস এবং প্যাঙ্গোলিন। অর্থাৎ, এই কয়েকটি প্রাণী পাখি বা স্তন্যপায়ী হওয়া সত্ত্বেও উকুন-আক্রান্ত হয় না। উকুন/উপদ্রব এর শ্রেণিবিভাগ

জীবতত্ত্ব

[সম্পাদনা]

বেশির ভাগ উকুনই পঁচা-খাদক (scavengers), এরা আশ্রয়দাতার চামড়া এবং চামড়ার উপরস্থ ময়লা খেয়ে থাকে। কিন্তু কোনো কোনো প্রজাতি রক্ত এবং তেলগ্রন্থি নিঃসৃত তেল খেয়ে বাঁচে। বেশির ভাগ প্রজাতির উকুন সুনির্দিষ্ট প্রানীর গায়ে বাস করে। এবং অনেক ক্ষেত্রেই সেই প্রানীদেহের নির্দিষ্ট অংশে বাস করে। কোনো কোনো প্রানীর গায়ে পনের ধরনের পর্যন্ত উকুন বাস করে। অবশ্য স্তন্যপায়ীদের শরীরে সাধারনত মাত্র এক থেকে তিন ধরনের উকুন থাকে। আর পাখীদের গায়ে সাধারনত দুই থেকে ছয় ধরনের উকুন থাকে। উদাহরণ স্বরূপ, মানুষের মাথায় এবং পিউবিক অঞ্চলে ভিন্ন ধরনের উকুন বাস করে। উকুনকে তার আশ্রয়দাতার শরীর থেকে সরিয়ে নিলে সাধারনতঃ বেশি সময় বাঁচে না।[]

উকুনের আক্রমণ

[সম্পাদনা]

উকুন আক্রান্ত হওয়াকে ইংরেজিতে পেডিকুলোসিস (Pediculosis) বলা হয়। আরো স্পষ্টভাবে বলা যায়, থির‍্যাপটেরা বর্গভুক্ত রক্তচোষা উকুনের আক্রমনকে পেডিকুলোসিস বলা হয়।[][] মানুষসহ গরম রক্তবিশিষ্ট যে কোনো স্তন্যপায়ী এবং পাখি উকুনে আক্রান্ত হয়।[][]

পেডিকুলোসিসের শ্রেনীবিভাগ

[সম্পাদনা]

মানবদেহে উকুন আক্রমনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:[]:৪৪৬-৮

  • মাথার উকুন (Pediculosis capitis)
  • শরীরের উকুন (Pediculosis corporis) (Pediculosis vestimenti, Vagabond's diseaseও বলা হয়)
  • পিউবিক অঞ্চলের উকুন (Pediculosis pubis) (Crabs)

মাথার উকুন

[সম্পাদনা]

মাথার উকুনের বৈজ্ঞানিক নাম Pediculus humanus capitis

স্বরূপ

[সম্পাদনা]

সাধারনত তিন থেকে দশ বছর বয়েসী বাচ্চা ও তাদের পরিবারেই বেশি দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা প্রায় তিন জন স্কুল-বয়সী বাচ্চার মাথায় উকুন পাওয়া যায়।[]

পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি উকুনে আক্রান্ত হন। আফ্রিকান বংশোদ্ভুতদের মাথায় খুব কমই উকুন থাকে; কারণ তাদের চুল বেশি ঘন।[] মাথার উকুন সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে একজনের মাথা থেকে আরেক জনের মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। উকুনের ডিমকে নিট বলা হয়; যা থেকে একটি নিম্ফ বা বাচ্চা জন্মে, পরে সেটা পূর্ণ বয়স্ক উকুনে পরিণত হয়।

উকুন প্রতি রাতে এক বা একাধিক বার খাদ্য গ্রহণ করে। সূঁচের মত মুখ উপাঙ্গ ব্যবহার করে তারা মানুষের মাথার চামড়া ছিদ্র করে রক্ত খেয়ে থাকে। সেসময় তাদের লালা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে; এতে চুলকানি সৃষ্টি হয়।[] উকুন মানুষের চামড়ায় গর্ত তৈরি করতে পারেনা।

রোগ নির্ণয়

[সম্পাদনা]

ঘন চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়িয়ে উকুন খুঁজে পাওয়া যায়। এটাই জ্যান্ত উকুন ধরার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।[] মাথায় উকুন হলে যেসব লক্ষন দেখা যায় তা হলো- মাথায় চুলকানি; মাথা উকুন আসার তিন চার সপ্তাহ পরে সবচেয়ে বেশি চুলকানি হয়। উকুনের কামড়ের দাগ খুবই অস্পষ্ট, সহজে দেখা যায় না।

বেশি চুলকালে আক্রান্ত স্থানে ঘা হতে পারে, যা পরে জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। এছাড়া উকুন দ্বারা 'লাউস-বর্ন-টাইফাস', 'লাউস-বর্ন-রিল্যাপসিং ফিভার' বা 'ট্রেঞ্চ ফিভার' নামক রোগ হতে পারে।

চিকিৎসা

[সম্পাদনা]

ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে পৃথিবীতে উকুনের আক্রমণ বেড়েছে, যা বছরে লক্ষ লক্ষ পর্যন্ত হয়।[] উকুনের ডিম, বাচ্চা ও পূর্ণ বয়স্ক উকুন সম্পূর্ণরূপে নিধনের কোনো নিশ্চিত চিকিৎসা নেই। অবশ্য বেশ কয়েক ধরনের চিকিৎসা আছে যেগুলো কিছু পরিমাণে সফলতা দেখায়। সেগুলো হচ্ছে, রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ, প্রাকৃতিক বস্তু ব্যবহার, চিরুনি, চুল কামানো, গরম বাতাস প্রয়োগ এবং সিলিকন ভিত্তিক লোশন।

শরীরের উকুন

[সম্পাদনা]

শরীরের উকুনের ইংরেজি নাম body louse এবং বৈজ্ঞানিক নাম Pediculus humanus humanus যাকে অনেক সময় Pediculus humanus corporis বলা হয়।[]) এরা কাপড়-চোপড়ে ডিম পাড়ে। এরা তুলনামূলকভাবে নতুন উদ্ভূত প্রজাতি। এরাও টাইফাস রোগ বিস্তার করে থাকে।

পিউবিক উকুন

[সম্পাদনা]

এরা যৌন-কেশ বা পিউবিক চুলে থাকে। ইংরেজি নাম Crab louse এবং বৈজ্ঞানিক নাম Pthirus pubis। এরা সারাজীবন মানবদেহেই থাকে এবং শুধুমাত্র রক্ত খেয়ে বাঁচে। মানুষ ছাড়া আর কোথাও এরা জীবন ধারণ করতে পারেনা, যদিও কিছু বানর জাতীয় প্রানীতে এদের নিকট-প্রজাতির দেখা মেলে। এদের সাথে মানুষের মাথা ও শরীরের উকুনের মিল নেই।

অন্যান্য প্রানীর উকুন

[সম্পাদনা]

গৃহপালিত প্রানীদের মধ্যে গবাদি পশুতেই উকুন বেশি হয়। [১০] This is a significant problem, as it can cause weight loss of 55 to 75 pounds per animal.[১০] Some species of lice infesting cattle include the cattle biting louse[Damalinia (Bovicola) bovis], the shortnosed cattle louse (Haematopinus eurysternus), the longnosed cattle louse (Linognathus vituli), and the little blue cattle louse (Solenopotes capillatus).[]

চিকিৎসা

[সম্পাদনা]

গবাদি পশুর উকুন মারার জন্য রাসায়নি পদার্থ ব্যবহার করা হয়, যেমন- ইনভারমেকটিন এবং সাইপারমেথ্রিন।

গ্যালারি

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. H. V. Hoell, J. T. Doyen & A. H. Purcell (১৯৯৮)। Introduction to Insect Biology and Diversity (2nd সংস্করণ)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 407–409। আইএসবিএন 0-19-510033-6 
  2. "Lice (Pediculosis)"The Merck Veterinary Manual। Whitehouse Station, NJ USA: Merck & Co.। ২০০৮। ২০০৯-০১-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-০৮ 
  3. Maunder, JW (১৯৮৩)। "The Appreciation of Lice"। Proceedings of the Royal Institution of Great Britain। London: Royal Institution of Great Britain। 55: 1–31। 
  4. James, William D.; Berger, Timothy G.; ও অন্যান্য (২০০৬)। Andrews' Diseases of the Skin: clinical Dermatology। Saunders Elsevier। আইএসবিএন 0-7216-2921-0 
  5. Leung AKC and Robson LM (মে ১, ২০০৮)। "Pruritis in Children: What's Itching?"Consultant for Pediatricians 
  6. "Lice (Pediculosis)"The Merck Manual। 2005 November। সংগ্রহের তারিখ 2008-02-19  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. Mumcuoglu KY, Friger M, Ioffe-Uspensky I, Ben-Ishai F, Miller J (২০০১)। "Louse comb versus direct visual examination for the diagnosis of head louse infestations"Pediatr Dermatol18 (1): 9–12। ডিওআই:10.1046/j.1525-1470.2001.018001009.xপিএমআইডি 11207962 
  8. Gratz, N. (১৯৯৮)। "Human lice, their prevalence and resistance to insecticides"। Geneva: World Health Organization (WHO) 
  9. Buxton, Patrick A. (১৯৪৭)। "The Anatomy of Pediculus humanus"। The Louse; an account of the lice which infest man, their medical importance and control (2nd সংস্করণ)। London: Edward Arnold। পৃষ্ঠা 5–23। 
  10. Hussain M A, Khan M N, Iqbal Z, Sajid M S and Arshad M (২০০৬)। "Bovine pediculosis: prevalence and chemotherapeutic control in Pakistan"Livestock Research for Rural Development18 (145)। ২০০৮-১২-০৩ তারিখে মূল (– Scholar search) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-০৮  [অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Human lice টেমপ্লেট:Orders of Insects