(Translated by https://www.hiragana.jp/)
ওয়াং সিশান - উইকিপিডিয়া বিষয়বস্তুতে চলুন

ওয়াং সিশান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ওয়াং সিশান
おう岐山きざん
২০১৬ সালে ওয়াং সিশান
গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের দশম উপরাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
১৭ মার্চ ২০১৮ – বর্তমান
রাষ্ট্রপতিশি চিনফিং
পূর্বসূরীলি ইউয়ানচো
কেন্দ্রীয় শৃংখলা তদারক কমিটির সম্পাদক
কাজের মেয়াদ
১৫ নভেম্বর ২০১২ – ২৫ অক্টোবর ২০১৭
ডেপুটিঝাও হোংঝু; অন্যান্য
পূর্বসূরীহে কুওছিয়াং
উত্তরসূরীচাও লেৎসি
কেন্দ্রীয় কর্ম পরিদর্শন পরিচালনা দলের নেতা
কাজের মেয়াদ
১৫ নভেম্বর ২০১২ – ২৫ অক্টোবর ২০১৭
ডেপুটিচাও লেৎসি
চাও হোংচৌ
পূর্বসূরীহে কুওছিয়াং
গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৫ মার্চ ২০০৮ – ১৪ মার্চ ২০১৩
প্রিমিয়ারওয়েন চিয়াপাও
দফতরঅর্থ, বাণিজ্য, অন্যান্য
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1948-07-19) ১৯ জুলাই ১৯৪৮ (বয়স ৭৬)
সিংতাও, শানতুং, চীন
জাতীয়তাচীনা
রাজনৈতিক দলচীনের কমিউনিস্ট পার্টি
প্রাক্তন শিক্ষার্থীনর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়
ওয়াং সিশান
চীনা হরফে "ওয়াং সিশান"
চীনা おう岐山きざん

ওয়াং সিশান (/wɑːŋ ˈʃɑːn/;[] চীনা: おう岐山きざん; জন্ম ১৯ জুলাই ১৯৪৮) হলেন একজন চীনা রাজনীতিবিদ, যিনি চীনের বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি।[] ওয়াং সিশান শি চিনফিংয়ের সাথে চীনের পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় শৃংখলা তদারক কমিটি, দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষের সম্পাদক এবং চীনের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০১৩ সাল থেকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চীনা রাষ্ট্রপতি শি চিনফিংয়ের সাথে দুর্নীতি দমন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।[][]

আশির দশকের শেষভাগে ওয়াং চীনের আর্থিক ক্ষেত্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ১৯৯৪ সালে তিনি চীন নির্মাণ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর তিনি তিনটি আঞ্চলিক দায়িত্ব পালন করেন। এগুলো হল: কুয়াংতুংয়ের উপগভর্নর, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির হাইনান শাখার সম্পাদক এবং বেইজিংয়ের মেয়র। তিনি ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের অধীনে অর্থ ও বাণিজ্যবিষয়ক উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এসময়ে তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর একজন সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

ওয়াং সিশান চীনের শানতুং প্রদেশের সিংতাওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষের আবাস শানসি প্রদেশের তিয়ানঝেনে ছিল বলে ধারণা করা হয়। মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি একদল শিক্ষিত যুবকের সাথে গ্রামাঞ্চলে কাজ করতে শুরু করেন। তিনি শানসি প্রদেশের ইয়ানানের একটি প্রজাসভার চাষীদের সাথে কাজ করার সময়ে তার সাথে পরিচয় ঘটে শি চিনফিংয়ের এবং তাদের পরিচয় বন্ধুত্বে গড়ায়।[] ১৯৭৩ সালে তিনি "শ্রমিক-চাষী-সৈনিক ছাত্র" হিসেবে শাআনশি প্রদেশের রাজধানী শিয়ানে অবস্থিত নর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৭৬ সালে তিনি স্নাতক হন। তার সাথে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইয়াও ইলানের কন্যা ইয়াও মিংশানের (姚明珊) সাথে ইয়ানানে পরিচয় হয়েছিল। তারা পরবর্তীতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্নাতক শেষ করা পর ওয়াং চীনা সামাজিক বিজ্ঞান একাডেমিতে কাজ করেছেন। সেখানে তিনি চীনা সাম্রাজ্যের ইতিহাস (অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে পরবর্তী সময়কাল) এবং প্রজাতন্ত্রী যুগে চীনের ইতিহাস (১৯১২ - ১৯৪৯) নিয়ে গবেষণা করেছেন। ১৯৮২ ইয়াও ইলিন কেন্দ্রীয় দফতরের অতিরিক্ত সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ওয়াং কেন্দ্রীয় দফতরের কার্যালয়ে গ্রামীণ নীতি সম্পর্কে গবেষণা করার জন্য নিযুক্ত করা হয়। এটিকে ওয়াংয়ের রাজনৈতিক জীবনের সূচনা বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।[]

আর্থিক ক্ষেত্রে কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ওয়াং নীতিনির্ধারণ সংক্রান্ত বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তাকে চীনের কৃষি বিনিয়োগ ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এক বছর পর তিনি চীন নির্মাণ ব্যাংকের উপগভর্নর পদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৯৪ সালে চীন নির্মাণ ব্যাংকের গভর্নর পদে নিযুক্ত হন এবং ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ঐ পদে নিযুক্ত ছিলেন। তার সহযোগিতায় মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক মর্গ্যান স্ট্যানলির সাথে ব্যাংকটির পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। তিনি দেশটির প্রথম বিনিয়োগ ব্যাংক চীন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন এবং এর প্রথম নির্বাহী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৭ সালে তাকে কুয়াংতুংয়ে বদলি করা হয় এবং তিনি কুয়াংতুং প্রদেশের নির্বাহী উপগভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন, যা প্রাদেশিক সরকারের সর্বোচ্চ পদগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৯৭ সালে এশীয় আর্থিক সংকটের সময়ে তিনি তার দলের কুয়াংতুং শাখার সম্পাদক লি চ্যাংচুনকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছিলেন। তখন থেকে ওয়াং তার "অর্থ বিশেষজ্ঞ" ইমেজের উন্নতি ঘটান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ঝু রংজির মন্ত্রীসভায়। এরপর তিনি রাজ্যের আর্থিক কাঠামো সংস্কার কমিশনের (国家こっか经济体制たいせい改革かいかく员会) প্রশাসনিক কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন।

বেইজিংয়ের মেয়র এবং উপপ্রধানমন্ত্রীত্ব

[সম্পাদনা]

২০০৩ সালের বসন্তে দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে সার্স রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাবার পর তিনি মেং জুয়েনংয়ের পর বেইজিংয়ের মেয়র হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তখন তিনি পাঁচ মাস ধরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির হাইনান প্রদেশ শাখার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বেইজিংয়ে আসার পর তিনি জনগণের কাছে সার্স রোগ সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করেন। তার পূর্বসূরির প্রশাসনের ব্যর্থতার দরুন তাকে প্রতিদিন সার্স রোগ সংক্রান্ত হালনাগাদকৃত তথ্য প্রেস রিলিজ আকারে প্রকাশ করা লাগত।[]

২০০৪ সালের শুরুর দিকে বেইজিংয়ের মেয়র পদে তার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব সরানো হয় এবং তাকে পুরোপুরিভাবে বেইজিংয়ের মেয়র পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। মেয়র হিসেবে তিনি বেইজিং অলিম্পিক গেমস কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাহী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৫ সালের মার্চ মাসে একটি স্থানীয় রেডিওর একটি সরাসরি অনুষ্ঠানে অপ্রতুল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের জন্য বেইজিংয়ের জনগণের নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। তার এই পদক্ষেপ গণমাধ্যমের প্রশংসা কুড়ায় এবং এটি সরকারি ব্যক্তি ও জনগণের মাঝে থাকা অদৃশ্য দূরত্ব কমাতে অবদান রেখেছে বলে অভিহিত হয়।[] তিনি অমায়িক এবং নিষ্ঠাবান হিসেবে পরিচিত।

২০০৭ সালে তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সপ্তদশ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং সপ্তদশ পলিটব্যুরোর সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৮ সালে তাকে লি খছিয়াং, হুই লিয়াং-ইউ এবং চাং তচিয়াংয়ের সাথে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তাকে অর্থ ও বাণিজ্যসংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চীন কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সংলাপে চীনা প্রতিনিধি দলে তৎকালীন চীনা রাষ্ট্রপতি হু জিনতাওয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১১ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে লন্ডনের ইন্সটিটিউট অব ডিরেক্টরের বাইরে জর্জ অসবোর্নের সাথে ওয়াং সিশান

২০০৯ সালে টাইম বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় ওয়াং সিশানকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল।[]

পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং দুর্নীতি দমন

[সম্পাদনা]
২০০৯ সালে ওভাল অফিসে চীনা জাতীয় বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা দাই বিঙ্গু ও তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার সাথে এক ফ্রেমে ওয়াং সিশান। ছবিতে তিনি একটি বাস্কেটবল ধরে আছেন।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসে পর্যবেক্ষকরা ওয়াংকে উদীয়মান রাজনৈতিক নেতা বলে গণ্য করছিলেন কেননা, তার রাজনৈতিক পরিবারের সাথে আত্মীয়তা, তার আর্থিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা, স্থানীয় সরকারে তার অংশগ্রহণ, নীতি নির্ধারণ ও সম্পাদন — এসব ক্ষেত্রে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসে তাকে পলিটব্যুরোর স্ট্যান্ডিং কমিটির কেন্দ্রীয় শৃংখলা তদারক কমিটির সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়, যা চীনের শীর্ষ পদগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত। শি চিনফিং অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এই ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। কেননা ওয়াংয়ের আর্থিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা এবং পূর্বে উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার দরুন ওয়াংকে কেন্দ্রীয় শৃংখলা তদারক কমিটির সম্পাদক থেকে আরো বড় পদের যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। কেন্দ্রীয় শৃংখলা তদারক কমিটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার ঘটনা ওয়াংয়ের কাছেও অপ্রত্যাশিত ছিল। ফাঁস হওয়া একটি ভিডিও বার্তায় কেন্দ্রীয় শৃংখলা তদারক কমিটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেবার পর ওয়াংকে কেন্দ্রীয় শৃংখলা তদারক কমিটির সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলতে শোনা যায়: "আপনারা অষ্টাদশ কংগ্রেস শুরুর আগে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে চোখ মেলাতে পারে, কে জানত ওয়াং সিশান কেন্দ্রীয় শৃংখলা তদারক কমিটির সম্পাদক হতে যাচ্ছে?... এভাবেই কোন ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকে। আপনাদেরকে ঠিক সেই কাজটিই করতে হবে যেটা দল আপনাকে করতে বলবে।"[১০]

দুর্নীতি দমন কার্যক্রমে তার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার ঘটনাটিতে আংশিকভাবে শি চিনফিংয়ের হাত আছে বলে বিবেচনা করা হয় কেননা, শি চিনফিংয়ের সাথে তার বন্ধুত্ব বিদ্যমান। যুবকালে শুরুতে তার এবং শি চিনফিংয়ের মাঝে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় শানসি প্রদেশে কায়িক শ্রমে লিপ্ত থাকার সময় তারা এক বিছানায় শুয়েছেন, ওয়াং তাকে অর্থনীতি সংক্রান্ত পুস্তক ধার দিয়েছেন এবং শি চিনফিং যখন পরবর্তীকালে ফুচিয়েনে দলের দায়িত্বে ছিলেন, তখনও তাদের মাঝে সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল।[১১]

২০১২ সালের ১৯ ডিসেম্বর বুধবারে অ্যান্ড্রু ডব্লিউ. মেলন অডিটোরিয়ামে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রন কার্ক এবং ভারপ্রাপ্ত মার্কিন বাণিজ্য সচিব রেবেকা ব্ল্যাঙ্কের সাথে সাক্ষাৎ করছেন।

২০১২ সালের শেষভাগের শুরুর দিকে ওয়াং সিশানকে শি চিনফিংয়ের দুর্নীতি দমন কার্যক্রমের প্রধান ব্যক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এটি ছিল ১৯৪৯ সাল থেকে কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত রাষ্ট্রটিতে সবচেয়ে সুদূরপ্রসারী কর্মসূচি। তাকে কেন্দ্রীয় কর্ম তদারক কমিটিরও নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দুর্নীতি নির্মূলের মন্ত্রকে সামনে নিতে প্রদেশ এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজদের দ্রুত অপসারণ করেন। দলটির অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর তাকে প্রায়শই চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক (সর্বোচ্চ নেতা) শি চিনফিংয়ের পর তাকে চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হত।[১২]

ওয়াং গণমাধ্যমের প্রিয়পাত্রে পরিণত হন। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ওয়াংয়ের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা তদারক কমিটি পার্টির নতুন ও সম্পূর্ণ শৃঙ্খলাসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে যা দলটির সদস্যদের নৈতিক আচরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রদান করেছিল। এই নীতিমালায় দলের সদস্যদের মাঝে নৈতিক চরিত্রের উন্নয়ন ও দুর্নীতি হ্রাসকরণের বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল।[১১] উপরন্তু, ওয়াং দলের কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা তদারক কমিটির সদস্যদের জন্য প্রথমবারের মত শৃঙ্খলাসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করেছিলেন।[১১] ওয়াংয়ের দুর্নীতি দমন কার্যক্রম তার দলের নেতৃত্বের মাঝে প্রশংসা অর্জন করে। অনেকে তাকে তার মেয়াদকাল শেষ হবার পর তাকে নতুন মেয়াদকালে ২০১৭ সালের ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসে দায়িত্ব গ্রহ্ণের জন্য অনুরোধ করেন। ষোড়শ জাতীয় কংগ্রেস থেকে "সাত-উচ্চ, আট-নিম্ন" নীতি প্রত্যেক প্রত্যেক পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যের জন্য প্রযোজ্য হত (উদাহরণস্বরূপ, যদি স্ট্যান্ডিং কমিটির কোন সদস্যের বয়স কংগ্রেস চলাকালে ৬৮ হয়, তবে তাকে সরে দাঁড়াতে হবে, কিন্তু যদি তার বয়স ৬৭ হয়, তবে তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন)। ওয়াং যদি ২০১৭ সালের পরে দায়িত্ব পালন করতেন, তবে তাকে এই অলিখিত নীতিমালা ভাঙতে হত। একটি সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং বলেন, "আমি যদি কোন বিভাগের প্রধান হতাম, তবে আমাকে বহু আগে অবসর নিতে হত। আবার যদি আমি উপমন্ত্রী বা মন্ত্রী হতাম, তবে আমি আমাকে এখনই অবসর নিতে হত।"[১১]

চীনের পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, শি চিনফিংয়ের দলের সাধারণ সম্পাদক পদের দ্বিতীয় মেয়াদকালে তিনি আরো বড় পদে অধিষ্ঠিত হবেন। কেননা, শীঘ্রই অবসরগ্রহণ করবেন (ろう同志どうし) এমন প্রবীণ নেতাদের নামের তালিকায় তার নাম উল্লেখ করা হয় নি।[১৩][১৪] ওয়াং সিশান চীনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টেরি ব্র‍্যানস্ট্যাডের সাথে শি চিনফিংয়ের একান্ত বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১৫]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ওয়াং সিশান সাবেক চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী ইয়াও ইলিনের কন্যা ইয়াও মিংশানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন; ওয়াং নিঃসন্তান।[১৬] কখনো কখনো তার বিবাহের দরুন তাকে দলের যুবরাজ বলে অভিহিত করা হয়।[১৭]

মার্কিন রাজস্ব সচিব হেনরি পলসন ওয়াংকে "স্থিরবুদ্ধিসম্পন্ন এবং কৌতূহলী" বলে অভিহিত করেছেন এবং "একজন আগ্রহী ঐতিহাসিক, যিনি দর্শন সংক্রান্ত বিতর্ক পছন্দ করেন এবং তার মাঝে দুষ্ট রসিকতাবোধ বিদ্যমান" বলে অভিহিত করেছেন। পলসন লিখেছেন, "তিনি একজন চীনা দেশপ্রেমিক কিন্তু, তিনি মার্কিনিদের বুঝেন এবং জানেন যে এই দুইটি দেশই একে অন্যেত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থেকে লাভবান হয়ে থাকে। এবং তিনি সাহসী — তিনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে থাকেন, তিনি এমন কিছু করেন যা পূর্বে কখনো করা হয় নি এবং তিনি সে কাজে সফল হন। ১৯৯৮ সালে চীনের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক সংকটের পর পুনর্গঠনে কাজ করেছেব এবং এরপর একটি ব্যাংকিং সংকট প্রতিরোধ করেছেন যা দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিকে শ্লথ করতে পারত।"[]

ওয়াং মার্কিন টিভি অনুষ্ঠান হাউস অব কার্ডস এর ভক্ত এবং প্রায়শই দুর্নীগি বিরোধী সম্মেলনে বক্তৃতা দেবার সময় অনুষ্ঠানটির নাম উল্লেখ করে থাকেন। ওয়াং বলেছেন যে, পার্টি হুইপের পদটি তাকে বিশেষভাবে বিমোহিত করে। তিনি আরো বলেছেন যে, তিনি কিছু কোরীয় ভাষার নাটক দেখেছেন। তিনি বলেছেন, "কোরীয় নাটকগুলো আমাদের থেকে এগিয়ে, এখনো ঐতিহ্যবাহী চীনা সংস্কৃতি (দৃশ্যমান শিল্পকলা) থেকে কোরীয় নাটকের (বর্ণনা করা) অন্তঃসার এবং বিষয় উন্নত।"[১৮]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "How to Say: Chinese leaders' names"Magazine MonitorBBC। ১৫ নভেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১৮ 
  2. "NPC 2018: Wang Qishan, Xi Jinping's trusted 'firefighter' lieutenant becomes China's vice-president"। The Straits Times। ২০১৮-০৩-১৭। Mr Wang cast his ballot on Saturday immediately after Mr Han Zheng, the seventh-ranked and most junior Standing Committee member, drawing enthusiastic applause from the other delegates. 
  3. Zheng Xinyi (২০১৮)। 《致敬おう岐山きざんとめ敢腐”てきふるえ慑》《东西南北なんぼく [Dong Xi Nan Bei] (চীনা ভাষায়)। 502। Changchun, Jilin: Dong Nan Xi Bei Agency। পৃষ্ঠা 12–15। আইএসএসএন 1000-7296 
  4. Zhu Jingsheng (২০১৮)। えい远的おう岐山きざん《广角镜》 [Wind Angle] (চীনা ভাষায়)। 542। Hong Kong: Sun Seven Stars। পৃষ্ঠা 28। আইএসএসএন 1609-2589 
  5. "Only Wang Qishan knew what Xi Jinping was going to do"Asia Nikkei। ২৬ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১৯ 
  6. かい读王岐山きざん从知あおいたくに务院ふく总理みち ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে はら载《21せい纪经济报どう作者さくしゃ孙雷
  7. "おう岐山きざんにんふく总理 金融きんゆう实战经验受瞩"। মার্চ ১৮, ২০০৮। 
  8. "诚沟どおりいち种感じん力量りきりょう"। মার্চ ৩, ২০০৫। 
  9. ""Wang Qishan" by Hank Paulson"। ২৬ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯ 
  10. "おう岐山きざん内部ないぶ讲话また流出りゅうしゅつ 频提习近平ちから泽东"Duowei। এপ্রিল ৭, ২০১৬। 
  11. "北京ぺきん观察:习近ひら为谁打破だは"ななじょうはち"?"Duowei News। অক্টোবর ২৯, ২০১৫। অক্টোবর ৩১, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৭, ২০১৯ 
  12. China’s second most powerful leader is admired and feared, The Economist
  13. "中央ちゅうおう领导同志どうしもちろう同志どうし-しん华网"www.xinhuanet.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-১৫ 
  14. あずさかえで"中央ちゅうおうりょうしるべさがせもちろう同志どうし」 おう岐山きざんれつめいたん こうさい添有りょく證據しょうこ"香港ほんこん01 (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-১৫ 
  15. "US trade move against China snared in legal concerns"Financial Times। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  16. "Profiles: China's new leaders"BBC News। ১৫ নভেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৩ 
  17. Allen T. Cheng and Li Yanping (৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮)। "China May Tap `Princeling' Wang for Top Economic Policy Post"। Bloomberg। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৩ 
  18. "おう岐山きざんわが也看韩剧"। ২০১৪-০৩-০৫। 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয়
পূর্বসূরী
বাই কেমিং
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির হাইনান শাখার সম্পাদক
২০০২–২০০৩
উত্তরসূরী
ওয়াং জিয়াওফেন
পূর্বসূরী
হে গুওকিয়াং
কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা তদারক কমিটির সম্পাদক
২০১২–২০১৭
উত্তরসূরী
ঝাও লেজি
বিধানসভার আসন
পূর্বসূরী
বাই কেমিং
হাইনান পিপলস কংগ্রেসের সভাপতি
২০০৩
উত্তরসূরী
ওয়াং জিয়াওফেং
সরকারি দফতর
পূর্বসূরী
মেং জুয়েনং
বেইজিংয়ের মেয়র
২০০৩–২০০৭
উত্তরসূরী
গুও জিনলং
পূর্বসূরী
লি ইউয়ানচাও
গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের উপরাষ্ট্রপতি
২০১৮–বর্তমান
উত্তরসূরী