(Translated by https://www.hiragana.jp/)
পাতা - উইকিপিডিয়া বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Leaf থেকে পুনর্নির্দেশিত)
পাতার বৈচিত্র্য
পাতা

পাতা (সংস্কৃত: পত্র) উদ্ভিদের বিটপ অংশের প্রধান পার্শ্বীয় প্রত্যঙ্গ যার মূল কাজ হল সালোকসংশ্লেষ[] পাতা উদ্ভিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পাতার ফলকের আকার সাধারণত চ্যাপ্টা এবং পাতলা হয় যাতে সূর্যের আলো কোষকলা ভেদ করে পাতার যে সমস্ত কোষে ক্লোরোপ্লাস্ট আছে তাদের সবার কাছে পৌঁছতে পারে। এ ছাড়াও পাতায় শ্বসন, বাষ্পমোচন ইত্যাদি শারীরবৃত্তীয় কাজ হয়। পাতা খাদ্য এবং জলের আধার হিসেবেও কাজ করতে পারে। কিছু উদ্ভিদে বিশেষ প্রয়োজনে পাতার আকৃতিগত পরিবর্তন হতে পারে । এছাড়াও কিছু কিছু উদ্ভিদের আবহাওয়া কারণে এদের রং আলাদা হয়ে থাকে ।[]

ফলককে আলোর দিকে তুলে ধরে পত্রবৃন্ত। তবে পাতার গঠন আলোচনা করতে সাধারণত পাতার ফলকের গঠনেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

আদর্শ পাতার বিভিন্ন অংশ

[সম্পাদনা]

গাছের যে পাতায় পত্রমূল, পত্রবৃন্ত এবং পত্রফলক পরিষ্কারভাবে দেখা যায় তাকে আমরা আদর্শ পাতা বলতে পারি। আম, জাম , কাঁঠাল , অশ্বত্থ, জবা প্রভৃতি গাছের পাতা আদর্শ পাতার উদাহরণ। একটি আদর্শ পাতায় তিনটি অংশ দেখা যায়। সেগুলি হলো— পত্রমূল, পত্রবৃন্ত বা বোঁটা, পত্রফলক।

পত্রমূল

[সম্পাদনা]

পাতার একেবাবে গোড়ায় যে অংশটি কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাকেই পত্রমূল বলে। অনেকসময় পত্রমূল প্রশস্ত হয়ে কাওকে সম্পূর্ণভাবে বেষ্টন করে রাখে। একে বেষ্টনী বলা হয়। ঘাস, তাল, কলা প্রভৃতির পাতায় বেষ্টনী দেখা যায়। পত্রমূলের দুপাশে অনেকসময় দুটি সরু সরু উপাঙ্গের উদ্ভব হয়। একে উপপত্র বলে। জবা, মটর প্রভৃতি গাছের পাতার গোড়ায় এরকম উপপত্র আছে। অবশ্য উপপত্র-বিহীন পাতাও প্রকৃতিতে অনেক দেখা যায়, যেমন-বট, অশ্বত্থ প্রভৃতি। লজ্জাবতী, ছোলা, মটর, আম, ইত্যাদি গাছের পাতায় পত্রমূল স্ফীত ধরনের। এ জাতীয় স্ফীত পত্রমূলকে উপধান বলে।

পত্র বৃন্ত বা বোঁটা

[সম্পাদনা]

পত্রমূল থেকে উদ্ভূত হয়ে যে দণ্ডাকার অংশটি ফলক অবধি বিস্তৃত থাকে তাকেই বৃন্ত বলে। বৃন্ত ফলককে ধরে রাখে ও এর ভিতর দিয়েই কাণ্ড ও ফলকের মধ্যেখাদ্য ও জল চলাচল করে। বৃন্ত যুক্ত পাতাকে সবৃন্তক পাতা বলা হয়-যেমন আম, বট, অশ্বত্থ, জবা প্রভৃতি। অপরপক্ষে অবৃন্তক বা বৃন্তহীন পাতার উদাহরণ আকন্দ, শিয়ালকাঁটা প্রভৃতি।

পত্র ফলক

[সম্পাদনা]

পাতার সবুজ, চ্যাপ্টা অংশই ফলক। ফলকের দুপাশের প্রান্ত পত্র-কিনার ও সামনের আগা পত্রাগ্র নামে আখ্যাত হয়। সাধারণত পাতার মাঝখান বরাবর একটি মোটা শিরা থাকে। একে মধ্যশিরা বলে। মধ্যশিরা থেকে দুপাশে শাখাশিরার উৎপত্তি হয় ও এগুলি ফলকের কিনার অবধি বিস্তার লাভ করে। এইসব শাখাশিরাও আবার ছোট ছোট উপশিরায় বিভক্ত হয়। ফলকের মধ্যে এইভাবে শিরাগুলির বিন্যাস ব্যবস্থাকে শিরাবিন্যাস অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।[]

একক পত্র ও যৌগিক পত্র

[সম্পাদনা]

সরল বা এককপত্র

[সম্পাদনা]

পাতায় একটিমাত্র ফলক থাকলে তাকে সরল বা এককপত্র বলে, যেমন আম, জাম, বট, অশ্বত্থ, জবা প্রভৃতির পাতা। অনেক সময় অবশ্য এককপত্রের ফলকটিতে এক বা একাধিক খাঁজের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই খাঁজ যতো গভীরই হোক না কেন মধ্যশিরাকে স্পর্শ না করা পর্যন্ত পাতাটি একক পত্রই থেকে যায়। এইরকম খাঁজযুক্ত সরল পাতার উদাহরণ- মূলা, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, পেঁপে প্রভৃতি গাছের পাতা।

যৌগিক পত্র

[সম্পাদনা]

একক পত্রের খাঁজগুলি গভীর থেকে গভীরতর হতে হতে মধ্য শিরাকে স্পর্শ করলে পর মূল ফলকাটি একাধিক খণ্ড বা অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই-অংশগুলিকে পত্রক বলে। এইরকম একাধিক পত্রক যুক্ত পাতাকেই যৌগিক পত্র বলা হয়। যৌগিক পত্র আবার দুই রকমের- পক্ষল বা পালকাকৃতি ও করতলাকৃতি।

পক্ষল বা পালকাকৃতি

[সম্পাদনা]

এককপত্রের ফলকটি লম্বালম্বিভাবে ভেঙ্গে গিয়ে (অনেকগুলি পত্রকের সৃষ্টি করলে এবং এগুলি মধ্যশিরার (এখন এই মধ্যশিরাকে পত্রকাক্ষ বলে) দুপাশে দুটিসারিতে সজ্জিত থাকলে তাকে পক্ষল যৌগিকপত্র বলে। এজাতীয় যৌগিক পত্রকে অনেকটা পাখীর পালকের মতো দেখায় বলে একে পালকাকৃতিও বলা যেতে পারে। উদাহরণ-নিমপাতা, তেঁতুলপাতা।

করতলাকৃতি

[সম্পাদনা]

যৌগিক পত্রের পত্রকগুলি যখন বৃন্তের আগায় একটি বিন্দুতে এমন ভাবে যুক্ত থাকে যে সমগ্র যৌগিক পত্রটিকে অনেকটা করতলের মত দেখায় তখন তাকেই করতলাকৃতি যৌগিক পত্র বলে। এ জাতীয় যৌগিক পত্রে দুটি, তিনটি বা বহু সংখ্যক পত্রক থাকতে পারে। উদাহরণ-বেল পাতা, শিমূল পাতা।

বিশ্লেষণ

[সম্পাদনা]

একটি পাতার ভেতরের গঠন নিম্নের চিত্রে দেখানো হয়েছে -

Diagram of leaf internal anatomy
Diagram of leaf internal anatomy

গ্যালারি

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Esau 2006
  2. "গাছের পাতা সবুজ হয় কেন?"বাংলা নিউজ ২৪। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. উচ্চমাধ্যমিক জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিদ্যা: শৈলেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়-তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি, কলকাতা,১৯৭৬, পৃঃ ৬৬,৬৭

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]