লিসবন
লিসবন Lisboa | |
---|---|
রাজধানী | |
সরকার | |
• ধরন | LAU |
জনসংখ্যা | ৫,৪৫,৭৯৬ |
• পৌর এলাকা | ২৬,৬৬,০০০ [১] |
• মহানগর | ২৮,৭০,২০৮[২] |
সময় অঞ্চল | WET (ইউটিসি0) |
• গ্রীষ্মকালীন (দিসস) | WEST (ইউটিসি+1) |
Postal Zone | 1149-014 Lisboa |
Area Code & Prefix | (+351) 21 XXX-XXXX |
ওয়েবসাইট | http://www.cm-lisboa.pt/ |
লিসবন (পর্তুগিজ: Lisboa; /ˈlɪzbən/ [liʒˈ
কিংবদন্তি অনুযায়ী প্রাচীন গ্রিক নায়ক ইউলিসিস লিসবন শহরটির পত্তন করেন। পুরাতাত্ত্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ অনুযায়ী অনুমান করা হয় যে খ্রিস্টপূর্ব ৫ম সহস্রাব্দেই এখানে লোকবসতি ছিল। সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ অব্দের দিকে ভূমধ্যসাগরের ফিনিসীয় জাতির লোকেরা এখানে একটি বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করেছিল, যার নাম ছিল ওলিসিপো। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকে এখানে কেল্টীয় জাতির লোকদের আগমন ঘটে এবং তারা স্থানীয় জনগণের সাথে মিশে যায়। ২০৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৪০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত লোকালয়টি রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার (ইউলিউস কায়েসার) এটিকে একটি ফেলিকিতাস ইউলিয়া নামের একটি পৌরসভার (মুনিকিপিয়াম) মর্যাদা দেন। রোমানরা এখানে সড়ক, প্রাচীন ও স্নানাগার নির্মাণ করে। ৫ম শতক থেকে উত্তর ইউরোপ থেকে আগত বেশ কিছু জার্মানীয় গোত্র শহরটিকে শাসন করে, যাদের মধ্যে ৬ষ্ঠ শতকের ভিসিগথ জাতির নাম উল্লেখ্য। এর দুই শত বছর পরে ৮ম শতকে উত্তর আফ্রিকা থেকে জিব্রাল্টার প্রণালী অতিক্রম করে আগত মুসলমান মুর জাতির লোকেরা স্পেন ও পর্তুগাল বিজয়ের অংশ হিসেবে ৭১৬ খ্রিস্টাব্দে লিসবন শহরটিও বিজয় করে নেয়। এর প্রায় সাড়ে ৪ শত বছর পরে ১১৪৭ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগালের খ্রিস্টান রাজা ১ম আফোনসোর (হেনরিকেস) নেতৃত্বে ও ইংরেজি খ্রিস্টান ধর্মযোদ্ধাদের সহায়তায় পর্তুগিজ খ্রিস্টানরা শহরটি পুনরায় তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ১২৫৬ সালে এটিকে পর্তুগালের জাতীয় রাজধানী বানানো হয়।.১২৬০ সাল নাগাদ রাজা ৩য় আফোনসো পর্তুগালের রাজদরবার কুইঁব্রা থেকে সরিয়ে লিসবনে নিয়ে আসেন। ফলে নগরীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চার হয়। বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে লিসবন নগরী ছিল তৎকালীন জ্ঞাত বিশ্বের সর্বপশ্চিম সীমানায় অবস্থিত একটি প্রত্যন্ত লোকালয়। কিন্তু ১৫শ ও ১৬শ শতকে এই দৃষ্টিভঙ্গি পালটে যায়। এটি ছিল পর্তুগালের অভিযান ও আবিষ্কারের স্বর্ণযুগ। সেসময় পর্তুগালের অভিযাত্রী ও দিগ্বিজয়ী সেনারা বিশ্বব্যাপী এক বিশাল ও শক্তিশালী সামুদ্রিক ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। লিসবন এই সাম্রাজ্যের বাণিজ্যিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। লিসবনের অধিবাসীদের ধনসম্পদ ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ লিসবন ইউরোপের একটি শীর্ষস্থানীয় নগরীতে পরিণত হয়। ১৫৮০ সালে স্পেন পর্তুগাল বিজয় করে নেয়। এরপর প্রায় ৬০ বছরব্যাপী স্পেনীয় শাসনের সময় লিসবনের গুরুত্ব হ্রাস পায়। লিসবনের কিছু অভিজাত ব্যক্তিত্বের নেতৃত্বে পর্তুগিজরা স্পেনীয়দেরকে বিতাড়িত করে এবং ১৬৪০ সালে পর্তুগালের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনে। ১৭শ শতকের শেষ দিকে ব্রাজিল থেকে আগত স্বর্ণ দিয়ে কারুকাজ করে বহু অভিজাত প্রাসাদোপম বাসভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ১৭৫৫ সালের ১লা নভেম্বর স্মরণকালের সবচেয়ে বড় একটি ভূমিকম্প লিসবন নগরীতে আঘাত হানে। একই সাথে আটলান্টিক মহাসাগরে উদ্ভূত সুনামি তথা বিশালাকৃতির সমুদ্রের ঢেউ ও তৎপরবর্তী অগ্নিকাণ্ডের কারণে লিসবন নগরীর দুই-তৃতীয়াংশ (৯ হাজারেরও বেশি ভবন) ধ্বংস হয়ে যায় এবং ৩০ হাজার ব্যক্তির মৃত্যু হয়। কিন্তু পর্তুগালের রাজা ১ম জোসেফের প্রধানমন্ত্রী মার্কিস দি পোঁবালের নেতৃত্বে ভূমিকম্পের পরে নগরীকে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। এই পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়াটির ব্যাপ্তি ছিল সুবিশাল ও অদ্বিতীয়। বিশেষত বাইশা এলাকাটিকে নগরকেন্দ্রের ধ্বংসপ্রাপ্ত সমত নিম্নভূমি অঞ্চলের উপরে পরিকল্পিতভাবে পুনর্নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ১৮০৭ সালে শহরটি আরেকবার দুর্ভাগ্যের শিকার হয়। সেসময় ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়নের বাহিনী শহরটি দখল করে। এসময় পর্তুগালের রাজপরিবার পালিয়ে ব্রাজিলে চলে যান। ১৮১১ সাল নাগাদ ফরাসিদেরকে বিতাড়িত করা হয় এবং এরপর ব্রিটিশরা প্রায় এক দশক শহরটির নিয়ন্ত্রণে ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগালের রাজা লিসবনে প্রত্যাবর্তন করেন। কিন্তু এর পরে প্রায় এক শতাব্দী ধরে লিসবন ও পর্তুগালে রাজনৈতিক নৈরাজ্য বিরাজ করে।
১৯শ ও ২০শ শতকে লিসবন শহরের কলেবর বৃদ্ধি পায়। ১৯০৮ সালে পর্তুগালের রাজা ও রাজপুত্র উভয়কেই হত্যা করা হয় এবং এর দুই বছর পরে ১৯১০ সালে পর্তুগালকে একটি প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়, যার রাজধানী হিসেবে লিসবনকে নির্বাচন করা হয়। ১৯৩২ সালে আন্তোনিও সালাজারের স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠিত হবার পরে রাজনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসলেও সামাজিক ও রাজনৈতিক নিষ্পেষণের মাধ্যমে এর মূল্য দিতে হয়। ১৯৪০ সালে পর্তুগালে একটি বিশ্বমেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং এই উপলক্ষে বহু পুরনো ঘিঞ্জি বসতিগুলি ভেঙে ফেলা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে পর্তুগালের নিরপেক্ষ অবস্থানের কারণে লিসবন নগরী দেশ থেকে পালানো অন্যান্য সমস্ত ইউরোপীয় শরণার্থীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়। লিসবন বন্দর থেকে বহু ইউরোপীয় উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকা মহাদেশে পাড়ি জমায়। ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে নতুন নতুন নির্মাণকাজের ফলে শহরের চেহারা পাল্টাতে শুরু করে। ১৯৭৪ সালে একটি বিপ্লবের মাধ্যমে পর্তুগালে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ঘটে। ঐ সময় পর্তুগালের আফ্রিকান উপনিবেশগুলি স্বাধীনতা অর্জন করে, যার রেশ ধরে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে বহু শরণার্থী ও অভিবাসীর আগমন ঘটে। এর ফলে শহরের কোষাগারের উপরে চাপ পড়লেও এটির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদি রূপ ইউরোপীয় সম্প্রদায়ে ১৯৮৬ সালে পর্তুগালের অন্তর্ভুক্তির সুবাদে লিসবনের বেশ উপকার হয়। এসময় ইউরোপীয় পুনরুন্নয়ন তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে লিসবনের অবকাঠামো মেরামত ও হালনাগাদ করা হয় এবং এর অর্থনীতিকেও আবার চাঙ্গা করা হয়। ১৯৮৮ সালে একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে যাতে চিয়াদো নামের ঐতিহাসিক ও অভিজাত পদচারী বিপণী এলাকাটি ধ্বংস হয়ে যায়, ফলে প্রায় ২০০০ লোক চাকুরি হারায় ও শত শত লোক গৃহহীন হয়ে পড়ে। এলাকাটিকে পুনর্নির্মাণ করা হয় এবং নগরীর বাকি অংশগুলিতেও, বিশেষ করে জাহাজের মাল খালাসের এলাকাগুলি তথা ডকগুলিতে উন্নয়ন অব্যাহত থাকে। ফলে শীঘ্রই নগরীটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটক গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়। ১৯৯৮ সালে লিসবন নগরীতে বিশ্বমেলার আয়োজন করা হয়। পর্তুগাল সরকার প্রায় ১৬৭ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করে নতুন একটি রেলস্টেশন, পাতালরেলের নতুন একটি রেলপথ ও তাগুস নদীর উপরে ইউরোপের দীর্ঘতম সেতু (১২ কিলোমিটার) ভাস্কো দা গামা নির্মাণ করায়। এই কর্মকাণ্ডগুলি নগরীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি ইউরোপীয় পর্যায়ে পর্তুগালের অর্থনীতির শক্তিরও পরিচায়ক।
সমুদ্র উপকূলবর্তী লিসবন নগরীটি এর শ্বেতবর্ণ সব ভবন ও অভিজাত নগর উদ্যান ও বাগিচার জন্য বিখ্যাত। লিসবনের কতগুলি স্বতন্ত্র অংশ নিয়ে গঠিত, যেগুলি ইতিহাসের ভিন্ন ভিন্ন পর্বে নির্মিত হয়েছে। লিসবনের সরকারী আনুষ্ঠানিক প্রবেশপথটি একটি প্রশস্ত শ্বেতপাথরের সিঁড়ি দিয়ে নির্মিত। সিঁড়িটি নদী থেকে উঠে গিয়ে একটি বড় চত্বরে শেষ হয়েছে, যেখানে খিলানে ছাওয়া অনেক পথ রয়েছে। চত্বরের উত্তরে লিসবনের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকাটি অবস্থিত, যার নাম সিদাদি বাইশা ("নিচু এলাকা")। এটি নদীর তীরে অবস্থিত একটি সমতল নিম্নভূমি এলাকা যেখানে বহু প্রশস্ত সমান্তরাল রাস্তা ও চত্বর দেখতে পাওয়া যায়; এগুলি ১৮শ শতকে পরিকল্পিতভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছিল। সিদাদি বাইশা এলাকাতে চোখে পড়বে জনসমাগমে পূর্ণ অনেক কফিঘর এবং নিয়ন বাতিতে আলোকিত ৪র্থ দোম পেদ্রু চত্বর বা রোসিউ চত্বর, যা লিসবনের দৈনন্দিন কর্মচাঞ্চল্যের অন্যতম কেন্দ্র। শহরের মূল সড়কটির নাম আভেনিদা দা লিবেরদাদি ("স্বাধীনতা রাজপথ"), যার দুপাশে পথচারীদের হাঁটার জন্য প্রশস্ত মোজাইক-আবৃত পথ আছে। আরও আছে কফিঘর ও ফোয়ারা। এই বৃক্ষশোভিত রাজপথ ধরে এগোলে নগরীর অপেক্ষাকৃত বাণিজ্যিক কার্যালয়বিশিষ্ট আধুনিক অট্টালিকায় পূর্ণ অংশে পৌঁছানো যায়। মধ্যযুগীয় আলফামা এলাকাটি নগরীর প্রাচীনতম অংশ। আলফামা এলাকার সরু, খোয়াপাথরে বাঁধানো রাস্তা ও অলিগলি আঁকা বাঁকা খাড়া পথ ধরে লিসবনের সবচেয়ে বড় টিলাপাহাড়টির ঢাল বেয়ে উঠে গেছে। টিলার শীর্ষে লিসবনের প্রাচীনতম স্মৃতিসৌধটি অবস্থিত যার নাম সাধু জর্জের প্রাসাদ; এটি একটি দশ তলাবিশিষ্ট মধ্যযুগীয় প্রাসাদ যার অংশবিশেষ খ্রিস্টীয় ৫ম শতকে নির্মিত হয়েছিল। বাইররো আলতু (উঁচু এলাকা) নামের এলাকাটি মূলত ১৭শ শতক থেকে বিদ্যমান; এখানকার সরু সড়কগুলি এত খাড়া যে যাতায়াতের জন্য সিঁড়ি, তারে টানা ট্রামগাড়ি এমনি লিফটেরও ব্যবহার আছে। তবে আলফামার রাস্তাগুলির চেয়ে এখানকার রাস্তাগুলি অপেক্ষাকৃত সোজা। বাইররো আলতু এলাকাটি কারিগরদের কর্মশালা ও নৈশজীবনের জন্য পরিচিত। নগরীর ঠিক বাইরের শহরতলীতে আধুনিক স্বল্প-ব্যয়ের অ্যাপার্টমেন্ট বাসভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
লিসবন নগরীর খুব কাছে মনোরম বালুময় সমুদ্রসৈকত ও প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলির দেখা পাওয়া যায়। এদের মধ্যে পশ্চিমের কাস্কাইশ থেকে ইশ্তোরিল পর্যন্ত তটরেখার উপরে অবস্থিত আটলান্টিক সৈকত (Cascais-Estoril) এবং দক্ষিণের কোস্তা দি কাপারিকা (Costa de Caparica) সৈকতগুলি বিশেষভাবে উল্লেখ করার মত। এছাড়া ভাড়া গাড়ি করে আরও দূরে অবস্থিত সেররা দি সিঁত্রা ও সেররা দা আররাবিদা সৈকতগুলিতে ভ্রমণ করা সম্ভব।
সাঁউ জর্জি দুর্গ থেকে পুরাতন লিসবন নগরীর প্যাস্টেল রঙে রাঙানো ভবন, তাগুস নদীর পোতাশ্রয় এবং পোন্তি ২৫ দি আব্রিল সেতুটি দেখতে পাওয়া সম্ভব। নিকটেই জাতীয় আজুলেজো জাদুঘরে ৫ শতক ব্যাপী শোভাবর্ধক সিরামিকের টালিগুলির ইতিহাস প্রদর্শন করা হয়েছে। নগরীর আঁটোসাঁটো খোয়াবিছানো হৃৎকেন্দ্রটিকে খুব সহজেই পায়ে হেঁটে কিংবা পুরনো আমলের ট্রামগাড়ি ও লিফটে চড়ে পরিভ্রমণ করা সম্ভব। মুর পর্বের আবহবিশিষ্ট আলফামা এলাকার পানশালাগুলিতে ফাদো ঘরানার সঙ্গীতশিল্পীদের সঙ্গীত মূর্চ্ছ্বনা শুনতে পাওয়া যায়। চিয়াদু এলাকার কফিঘর, দোকানপাট ও সামুদ্রিক খাবারের রেস্তোরাঁগুলির পরেই বাইররো আলতু এলাকাটিতে গেলে পাওয়া যাবে উচ্ছ্বল নৈশজীবনের স্বাদ। নিঃশব্দ উদ্যানের মধ্যে স্থাপিত কালুস্তি গুলবেনকিয়ান জাদুঘর ভবনসমষ্টিটিতে উল্লেখ করার মতো শিল্পকলার প্রদর্শনী রয়েছে। নদীতীরে রয়েছে ১৬শ শতকে নির্মিত জেরোনিমুস মঠ ও বেলেঁ বুরূজ। পূর্বে রয়েছে অত্যাধুনিক পার্কি দাস নাসোঁয়েশ এলাকা ও তার বিশাল ওসেয়ানারিউ অ্যাকুয়ারিয়াম।
লিসবনের অনেকগুলি গির্জার অভ্যন্তরভাগে স্বর্ণ, মর্মর পাথর, খোদাইকৃত কাঠ ও বিরল টালি দিয়ে শোভাবর্ধন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬শ শতকে নির্মিত সাঁউ রোকি (São Roque) গির্জাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পর্তুগালের রাজধানী হবার সুবাদে লিসবন নগরীতে দেশের সমস্ত প্রধান প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলি অবস্থিত। আইনসভার সদস্যরা জাতীয় সংসদের প্রাসাদ ভবনে একত্রিত হন। একটি পূর্বতন রাজপ্রাসাদ বর্তমানে পর্তুগালের রাষ্ট্রপতির আনুষ্ঠানিক বাসভবন। কেন্দ্রীয় লিসবন থেকে ভাটির দিকে অবস্থিত বেলেঁ এলাকাতে বিভিন্ন জাদুঘর ও স্মৃতিসৌধ আছে। ১৬শ শতকের স্থাপত্যকলার নিদর্শন হিসেবে আছে বেলেম বুরূজ (Belém) এবং জেরোনিমোস মঠ (Jerónimos)। ১৫০২ সালে নির্মিত জেরোনিমোস মঠটিতে জাতীয় পুরাতত্ত্ব ও জাতিবিদ্যা জাদুঘরটি অবস্থিত, যেখানে প্রাগৈতিহাসিক ও রোমান গহনার কাজ সংরক্ষিত আছে। এই মঠ ও ১৫১৫ সালে নির্মিত বেলেঁ বুরূজটি পর্তুগালের অভিযান যুগের স্থাপত্যের সাক্ষী। ২০শ শতকে নির্মিত আবিষ্কার স্মৃতিসৌধ এই যুগটিকে স্মরণ করছে।
পর্তুগালের উচ্চশিক্ষাব্যবস্থার প্রধান কেন্দ্র লিসবন বিশ্ববিদ্যালয় (১২৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত) নগরীর উত্তরে অবস্থিত। জাতীয় গ্রন্থাগার, জাতীয় মহাফেজখানা, কেন্দ্রীয় পৌরসভা গ্রন্থাগার, এবং আজুদা নামের প্রাচীন রাজকীয় গ্রন্থাগারে বহুসংখ্যক বিরল গ্রন্থ ও পাণ্ডুলিপি সংরক্ষিত আছে। ১৬শ শতকে লিসবনে জন্ম নেওয়া পর্তুগালের কিংবদন্তিসম জাতীয় কবি লুইজ দি কামোঁইশের একটি স্মৃতিসৌধ ও মূর্তি প্রাশা লুইজ দি কামোঁইশ নামক ছোট একটি চত্বরে দেখতে পাওয়া যায়।
নগরীতে দুইটি প্রধান নাট্যশালা আছে এবং একটি অর্কেস্ট্রা আছে। ১৯৬০-এর দশকে নির্মিতে গুলবেনকিয়ান ফাউন্ডেশন জাদুঘরে সঙ্গীত, ধ্রুপদী ব্যালে নৃত্য এবং মধ্যপ্রাচ্যীয় ও ইউরোপীয় দৃশ্যকলা ও অন্যান্য শিল্পকর্মের প্রদর্শনী আছে। লিসবনে অন্যান্য জাদুঘরগুলিতে প্রাচীন ঘোড়ার গাড়ি, নগরের ইতিহাস, বিভিন্ন ধরনের শিল্পকলার সংগ্রহ আছে। জাতীয় টালি জাদুঘরে ১৫শ শতক থেকে নির্মিত আজুলেজোস (azulejos) নামের রঞ্জিত টালির প্রাচীন ও ব্যাপক সংগ্রহ আছে। প্রাচীন শিল্পকলা জাদুঘরে পর্তুগিজ রেনেসাঁস পর্বের চিত্রকর্মের পাশাপাশি মাদুর, নকশী কাপড়, মৃৎশিল্প, স্বর্ণের ও রূপার কাজ প্রদর্শিত হয়। পৌর জাদুঘরে লিসবন নগরীর বর্ণিল ইতিহাসের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। নৌ-অভিযান ও আবিষ্কার যুগের আরও অনেক নিদর্শন সামুদ্রিক জাদুঘরে রক্ষিত আছে
লিসবনের জনসংস্কৃতির দুইটি বিশেষ দিক হল ষাঁড়ের লড়াই ও ফাদো ঘরানার গান। গ্রীষ্মের মাসগুলিতে একটি বলয়াকৃতির ষাঁড়ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ষাঁড়লড়াকুরা ধেয়ে আসা উন্মত্ত ষাঁড়ের সাথে বিভিন্নভাবে খেলা করে উপস্থিত দর্শকদের আনন্দবিনোদন দান করে। বাইররো আলতু এলাকার পানশালাগুলিতে ফাদো ঘরানার গায়ক গায়িকারা আবেগপ্রবণ বিলাপময় লোকগীতি গেয়ে থাকে।
পর্যটন, ব্যাংকিং, বীমা ও অন্যান্য সেবাখাতের শিল্পসমূহ লিসবনের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বৃহত্তর লিসবন এলাকাটি দেশের একটি প্রধান শিল্পোৎপাদন কেন্দ্র। ঐতিহ্যবাহী শিল্পজাত পণ্যের মধ্যে সাবান, ইস্পাত ও অস্ত্র প্রধান। এছাড়া বর্তমানে খনিজ তেল পরিশোধন, হীরা কর্তন, কাচের দ্রব্য, ইলেকট্রনীয় দ্রব্য, মার্জারিন, কর্ক, মোটরযান, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও কাগজের দ্রব্য উৎপাদন করা হয়। এখানে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ একটি সিমেন্ট কারখানা এখানে অবস্থিত। লিসবনের অর্থনৈতিক জীবন এর পোতাশ্রয়টিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। এই বন্দর থেকে পোর্ট নামের দ্রাক্ষাসুরা এবং কর্ক রপ্তানি করা হয়। শিল্পজাত দ্রব্যের মধ্যে চিনামাটির দ্রব্য উল্লেখ্য, বিশেষ করে লিসবন শহরের খ্যাতনামা টালিগুলি। এছাড়া শিল্পীর হাতে বানানো জুতা ও চামড়াজাত দ্রব্য ও তামার তৈজসপত্রও উৎপাদিত হয়। শিল্পকারখানাগুলি মূলত নগরীর বাইরে তাগুস নদীর অপর তীরে বিকাশ লাভ করেছে। পোন্তি ২৫ দি আব্রিল নামের ঝুলন্ত সেতুটি নদীর দুই তীরকে সংযুক্ত করেছে।
লিসবন পর্তুগালের প্রধানতম শিল্প অঞ্চল। এখানে জাহাজঘাটা, খনিজ তেল পরিশোধন কেন্দ্র, এবং রাসায়নিক দ্রব্য, সিমেন্ট, ইস্পাত, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ভৌত যন্ত্রাংশসামগ্রী, কাগজ ও বস্ত্র উৎপাদনের শিল্পকারখানা আছে। প্রধানত পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য কাঁচামাল, বিশেষায়িত যন্ত্রপাত এবং ইলেকট্রনীয় সরঞ্জাম আমদানি করা হয়। কর্ক, টিনজাত মাছ, জলপাই তেল, রজন ও দ্রাক্ষাসুরা রপ্তানি করা হয়। অধিকন্তু লিসবন পর্তুগালের সেবা খাতের প্রধান কেন্দ্র। এখানে ব্যাংক, অর্থসংস্থান, বীমা ও টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান অবস্থিত। পর্তুগালে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে জড়িত আন্তর্জাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলির সিংহভাগের প্রধান কার্যালয় লিসবনে অবস্থিত। সাম্প্রতিক দশকগুলিতে জাতীয় সরকার লিসবন নগরীর পরিবহন ও অন্যান্য অবকাঠামোর আধুনিকায়নের জন্য অনেক কাজ করেছে। বর্তমানে পর্যটন নগরীর আয়ের অন্যতম একটি উৎস।
লিসবন অসাধারণ উৎকৃষ্ট একটি প্রকৃতিদত্ত পোতাশ্রয়ের অধিকারী। এটি পর্তুগালের প্রধান সমুদ্রবন্দর। এছাড়াও এটি দেশটির রেল ও মহাসড়ক ব্যবস্থার কেন্দ্রে অবস্থিত। লিসবন বিমানবন্দর পর্তুগালের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ইউরোপের দুইটি দীর্ঘতম সেতু, ২৫শে এপ্রিল সেতু (১৯৬৬ সালে উন্মুক্ত) এবং ভাস্কো দা গামা সেতু (১৯৯৮ সালে উন্মুক্ত) লিসবন নগরীর তাগুস নদীর উপর দিয়ে চলে গেছে।
লিসবনের গণপরিবহন ব্যবস্থাটি বৈদ্যুতিক ট্রামগাড়ি, রেলগাড়ি ও বাসের একটি আন্তঃজালিকাব্যবস্থা নিয়ে গঠিত। শহরের খাড়া পাহাড়গুলিতে উঠানামা করার জন্য এলেভাদর নামের তার-টানা ট্রামগাড়ির সুবব্যবস্থা আছে। কেন্দ্রীয় লিসবনের এলেভাদর দি সাঁতা জুস্তা নামক পেটা লোহায় নির্মিত খাড়া এলিভেটরটিতে করে প্রায় ৪৫ মিটার বা ১৫০ ফুট উপরে উঠে লিসবন শহরের একটি চমৎকার দৃশ্য অবলোকন করা সম্ভব। ১৯৯৮ সালের বিশ্বমেলার আয়োজন উপলক্ষে লিসবন নগরীর পরিবহন ব্যবস্থার আমূল রদবদল ও সম্প্রসারণ সাধন করা হয়।
লিসবন পর্তুগালে রেলব্যবস্থা ও সড়কব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। এখানে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে। এখানে পর্তুগালের বৃহত্তম শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলি অবস্থিত। লিসবন একই সাথে দেশের প্রধানতম সামুদ্রিক বন্দর। এখানে জাহাজ নির্মাণের কারখানা, খনিজ তেল পরিশোধন কেন্দ্র, রাসায়নিক দ্রব্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য, কাগজ ও বস্ত্র উৎপাদনের কারখানা আছে। বন্দরের মাধ্যমে মূলত শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করা হয়। রপ্তানিজাত দ্রব্যের মধ্যে কর্ক, টিনে সংরক্ষিত মাছ, জলপাই তেল, রজন ও দ্রাক্ষাসুরা (ওয়াইন) উল্লেখ্য।
লিসবন নগরীটি সাতটি অন্নুচ পাহাড় বা টিলার ঢালের উপরে ধাপে ধাপে নির্মাণ করা হচ্ছে; পাহাড়গুলি তাগুস নদীর প্রশস্ত মোহনা ও পোতাশ্রয়টির দিকে মুখ করে আছে। সমুদ্র সমতলে শহরটির নিম্নতম ধাপে বন্দর এলাকাটি অবস্থিত। জলভাগের কাছে ছবির মত সুন্দর প্রাণবন্ত আলফামা এলাকাটি অবস্থিত। ১৭৫৫ সালের মহাভূমিকম্প থেকে রক্ষা পাওয়া স্বল্প কিছু এলাকার মধ্যে আলফামা অন্যতম; এখানে এখনও সরু সরু আঁকাবাঁকা মধ্যযুগীয় রাস্তা দেখতে পাওয়া যায়, যা মধ্যযুগীয় আবহ ধরে রেখেছে। নগরীর পশ্চিমভাগে ১৭৫৫ সালের ভূমিকম্পে সম্পূর্ণ ধ্বংস হবার পরে পুনরায় নির্মিত বাইশা (Baixa) অর্থাৎ নিম্ন নগরী এলাকাটিতে ছকে কাঠা সমান্তরাল রেখায় প্রসারিত সড়ক ও বৃক্ষশোভিত প্রশস্ত সব রাজপথ, দৃষ্টিনন্দন চত্বর ও বিশালাকার উন্মুক্ত সব নগর-উদ্যান অবস্থিত। আভন্যু দি লা লিবের্তাদি এই এলাকাটির প্রধান অক্ষসড়ক। একটি বিজয় খিলান অতিক্রম করে নদীর তীরে প্রাসা দু কোমের্সিউ (Praca do Comércio) চত্বরে পৌঁছানো যায়। অতীতে তেররেইরু দু পাসু (Terreiro do Paço) নামে পরিচিত এই চত্বর ও তার আশেপাশের অলিগলিগুলি লিসবনের একটি ঐতিহ্যবাহী এলাকা গঠন করেছে। এটিই সমুদ্র থেকে নগরে ঢোকার ঐতিহ্যবাহী প্রবেশপথ। বাইশা এলাকার পশ্চিমে একটি পাহাড়ের উপরে বাইররু আলতু নামক নগরীর উঁচু অংশে মুরাইয়াসহ অন্যান্য এলাকাগুলিতে ১৭শ শতকের সরু সর্পিলাকার অলিগলি, বাসভবন ও গির্জার দেখা পাওয়া যায়। লিসবনের সর্বোচ্চ পাহাড় সাঁউ জর্জি-র শীর্ষে ৫ম থেকে ৯ম শতকে নির্মিত সাঁউ জর্জি দুর্গটি (Castelo de São Jorge) আধিপত্য বিস্তার করে দাঁড়িয়ে আছে। এটি আদিতে একটি মুর দুর্গ ছিল। এখান থেকে সমগ্র লিসবন নগরীর একটি সম্পূর্ণ পরিদৃশ্য অবলোকন করা সম্ভব।
লিসবন নগরী ধর্মীয়ভাবে একজন খ্রিস্টান মহাবিশপের অধীনস্থ এলাকা বলে এখানে বহু কনভেন্ট, গির্জা ও প্রাচীন মঠ আছে। এদের মধ্যে ১৬শ শতকে বারোক পর্বে নির্মিত সেন্ট রশ গির্জা এবং পাত্রিয়ার্কাল সে নামক গোথিক মহাগির্জা বা ক্যাথেড্রালটি উল্লেখযোগ্য। লিসবনের প্রান্তীয় শহরতলীতে ১৬শ শতকে নির্মিত বেলেঁ বুরূজটি বন্দরে প্রবেশের পথটি নির্দেশ করছে এবং ভাস্কো দা গামার ভারতে যাওয়ার সমুদ্রপথ আবিষ্কারের ঘটনাটি স্মরণ করছে। জেরোনিমোশ গির্জাটিতে ভাস্কো দা গামা ও লুইজ দি কামোঁইশের সমাধি আছে। এই দুইটি স্থাপনাই মানুয়েলের আমলের সেরা স্থাপত্যকীর্তি।
লিসবন নগরীতে বহুসংখ্যক গ্রন্থাগার, বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ১২৮৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়টি সবচেয়ে প্রাচীন। এছাড়া অনেকগুলি জাদুঘরও আছে যাদের মধ্যে কালুস্ত-গুলবেঙ্কিন ফাউন্ডেশনের জাদুঘর এবং ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মুজেও দু ডিজাইন উল্লেখযোগ্য।
লিসবনে অনেক পুরাতন গির্জা, কনভেন্ট ও মঠ আছে। এখানে ১২শ শতকে নির্মিত রোমানকল্প-গোথিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত একটি মহাগির্জা বা ক্যাথেড্রাল আছে, যার নাম সে (Sé)। মহাগির্জাটি কালক্রমে অনেকগুলি ভূমিকম্পের শিকার হয়। বেলেঁ প্রশাসনিক এলাকাতে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন জেরোনিমোশ মঠটি পর্তুগালের রাজা মানুয়েল ১৬শ শতকে নির্মাণ করান, যার উদ্দেশ্য ছিল পর্তুগিজ অভিযাত্রী ভাস্কো দা গামা-র ভারতে যাওয়ার সমুদ্রপথ আবিষ্কারের ঘটনাটিকে স্মরণ করা। এই মঠের ভেতরে ভাস্কো দা গামা ও ১৬শ শতকের বিখ্যাত পর্তুগিজ কবি লুইজ দি কামোঁইশের সমাধি দুইটি অবস্থিত। ১৭৫৫ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরে লিসবন নগরী পুনর্নির্মাণ করার সময় এখানে পোম্বালিন নামের এক স্বতন্ত্র ধরনের রোকোকো শৈলীর স্থাপত্য জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই স্থাপত্যশৈলীতে রঙবেরঙের, মূলত নীল ও সাদাবর্ণের সিরামিকের টালি শোভাবর্ধনের কাজে ব্যবহৃত হয়। ভূমিকম্পের আগে সূক্ষ্ম ভাস্কর্যমূলক কারুকাজ বেশি প্রচলিত ছিল।
১৯৯৮ সালের বিশ্বমেলার প্রস্তুতি হিসেবে লিসবনের কিছু কিছু এলাকার নতুন করে সংস্কার করা হয়। মূল মেলার স্থানটি উপকূলে অবস্থিত একটি অবহেলিত শিল্প এলাকার বিশাল অংশের উপরে নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে এই স্থানটিকে কেন্দ্র করে একটি বিশালায়তন পৌর পুনরুন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়, যা উত্তর-পূর্ব লিসবনের চেহারাই পালটে দেয়। বিশ্বমেলার স্থানটিতে বর্তমানে একটি খুচরা কেনাকাটার বিপণীবিতান রয়েছে, আরও আছে মেলাতে ব্যবহৃত অনেক প্যাভিলিয়ন। এদের মধ্যে আছে মহাসাগর প্যাভিলিয়ন, যা ইউরোপের বৃহত্তম অ্যাকুয়ারিয়াম, এবং ইউটোপিয়া প্যাভিলিয়ন, যা কনসার্ট ও অন্যান্য বিনোদন পরিবেশনার অনুষ্ঠানস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ২০০৪ সালের ইউরোপীয় ফুটবল শিরোপা প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি হিসেবে নতুন একটি স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি নগরীর অতিরিক্ত আরও উন্নতি সাধন করা হয়।
ছবিতে লিসবন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ [১]/Demographia World Urban Area
- ↑ https://tabulador.ine.pt/indicador/?id=0011609&lang=EN
- ↑ Instituto Nacional de Estatística (INE), Census 2021
- ↑ "Law nr. 75/2013" (পিডিএফ)। Diário da República (Portuguese ভাষায়)। Assembly of the Republic (Portugal)। ২৭ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল (pdf) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ Marques da Costa, Eduarda (২০১৬)। "Socio-Economia" (পিডিএফ)। Atlas Digital da Área Metropolitana de Lisboa। ১৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০২০।