সুমেরু অঞ্চল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার বর্তমান সংস্করণ, যা KanikBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০১:৪৩, ৫ জুলাই ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (ইংরেজি উইকিপিডিয়া ও উইকিউপাত্তের তথ্যের ভিত্তিতে বট কর্তৃক বিষয়শ্রেণী যোগ)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক।

(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
আর্কটিক অঞ্চল এবং আশপাশের দেশসমূহের মানচিত্র

সুমেরু অঞ্চল বা আর্কটিক (ইংরেজি: Arctic) পৃথিবীর সর্ব উত্তরের অঞ্চলটির নাম। ইংরেজি নামটি এসেছে গ্রিক শব্দ arktos থেকে যার অর্থ "ভালুক"। আকাশের উত্তর-পূর্ব কোণে দেখা যাওয়া একটি তারামণ্ডলের আকৃতি ভালুকের মত হওয়ায় এমন নাম দেয়া। অনেক সময় সুমেরু অঞ্চলের সীমানা হিসেবে সুমেরু বৃত্তকে নির্ধারণ করা হয়, যা বিষুব রেখা থেকে ৬৬ ডিগ্রি ৩০ মিনিট উত্তরে কল্পিত একটি গাণিতিক রেখা। এই রেখার উত্তরের সকল স্থানে বছরে অন্তত একটি এমন সময় আসে যখন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সূর্য একবারও অস্ত যায় না, এবং আরেক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সূর্য একবারও উদিত হয় না। অবশ্য এর কোন ভৌগোলিক চিহ্ন নেই, অর্থাৎ এই রেখা অতিক্রম করার সময় কোন তাৎক্ষণিক ভৌগোলিক পরিবর্তন চোখে পড়বে না।

কোন সুস্পষ্ট বিভাজন চিহ্ন না থাকলেও সুমেরু অঞ্চল আলাদা করার একটা সহজ উপায় আছে। যে অনিয়মিত ও বক্র রেখাটি দিয়ে সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত গাছগুলোকে চিহ্নিত করা যায় তার উত্তরের সবকিছুকেই সুমেরু অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সেখানকার পরিবেশ কোন বৃক্ষ ধারণে সক্ষম নয়। বৃক্ষরেখার উত্তরে অবস্থিত স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রিনল্যান্ড; নরওয়ের Svalbard ও অন্যান্য মেরুদ্বীপ; সাইবেরিয়া, আলাস্কাকানাডার সর্বউত্তরের ভূমিসমূহ; ল্যাব্রাডরের উপকূল; আইসল্যান্ডের উত্তরাংশ এবং ইউরোপের আর্কটিক উপকূলের কিছু অংশ। উত্তর মেরু তথা সুমেরু কোন ভূমি নয়, বরং বরফাচ্ছাদিত সমুদ্রের উপর অবস্থিত, যাকে আর্কটিক মহাসাগর বা উত্তর মহাসাগর বলা হয়। সুতরাং বলা যায় বরফাচ্ছাদিত উত্তর মহাসাগর এবং তার চারদিকের কিছু চিরহিমায়িত ভূমি নিয়েই সুমেরু অঞ্চল।

রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে আটটি সুমেরু আঞ্চলিক রাষ্ট্রের (কানাডা, রাশিয়া, ডেনমার্ক, নরওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ড) সর্বউত্তরের সব স্থানগুলোকেই সুমেরু অঞ্চলের ভেতর ফেলা হয়, যদিও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের অনেকগুলোই সুমেরু বৃত্তের দক্ষিণে। সুমেরু অঞ্চলে সাধারণত শীত ও গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা ও পরিবেশের মধ্যে বিশাল পার্থক্য দেখা যায়। অঞ্চলটির উত্তরাংশ পুরো বছর বরফাচ্ছাদিত থাকে, এবং দক্ষিণাংশে ঘাস, হোগলা ও গুল্মজাতীয় গাছ দেখা যায়। চিরহিমায়িত ভূমির পৃষ্ঠ অবশ্য গ্রীষ্মকালে সকল বরফ ঝেড়ে ফেলে সজীব হয়ে ওঠে। এখানকার তিন-পঞ্চমাংশ জায়গাই আসলে চিরহিমায়িত অঞ্চলের বাইরে। গ্রীষ্মকাল সংক্ষিপ্ত হলেও তখন সূর্য দীর্ঘক্ষণ ধরে আলো ও তাপ দিতে পারে।

বিংশ শতাব্দীতে সুমেরু অঞ্চল নিয়ে মানুষের আগ্রহ দিন দিন বেড়েছে, বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। এর কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে: অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঘনবসতি অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত আকাশপথ, খনিজ পদার্থ বিশেষ করে পেট্রোলিয়াম, বনভূমি ও ঘাসভূমির উপস্থিতি এবং আবহাওয়াবিদ্যায় এর গুরুত্ব। এই অঞ্চলের বরফের মাঝে বাস করে জুপ্ল্যাংকটন, ফাইটোপ্ল্যাংকটন, মাছ, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী, পাখি, স্থলচর প্রাণী, উদ্ভিদ ও কিছু মানব গোষ্ঠী। এই অঞ্চলের সুপরিচিত অনন্য জীবগুলোর মাঝে রয়েছে মেরু ভালুক, মেরু শেয়াল, সাদা লেজবিশিষ্ট টারমিগান পাখি, মাস্ক ষাঁড়। আর মানব গোষ্ঠীদের উদাহরণ হিসেবে এস্কিমো, সামি-দের নাম করা যায়।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Arctic, Encyclopedia Britannica

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]